Technology

কলয়েড কি? কলয়েডের বৈশিষ্ট্য

কলয়েড কি? কলয়েডের বৈশিষ্ট্য– কলয়েড হচ্ছে একটি ক্ষুদ্র কণা।  এখন আপনাদের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে,এই ক্ষুদ্র বলতে কতটুকু ক্ষুদ্র কণাকে বোঝানো হয়? কোন কণার দৈর্ঘ্য কতটা ছোট হলে তাকে কলয়েড বলা যাবে? আজকের পোস্টে এ সকল বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। আজকের পোস্টটি পড়লে আপনি কলয়েড কি? কলয়েডের বৈশিষ্ট্য, কলয়েড কণার উদাহরণ, কলয়েড দ্রবণ, কলয়েড দ্রবণের উদাহরণ, কলয়েড ধর্ম, কলয়েড দ্রবণের দশা, কলয়েড দ্রবণ কেন তৈরি হয় এই বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে পারবেন।

কলয়েড কি?

কলয়েড কণার দৈর্ঘ্য জানার আগে দৈর্ঘ্য পরিমাপের একক সম্পর্কে জেনে নিই। দৈর্ঘ্য পরিমাপের আন্তর্জাতিক একক হলো মিটার।

আমরা জানি, ১ মিটারের ১০০ ভাগের ১ ভাগ দৈর্ঘ্যকে ১ সেন্টিমিটার বলে। আবার, ১ মিটারের ১০০০ ভাগের ১ ভাগ দৈর্ঘ্যকে ১ মিলিমিটার বলে। এবং ১ মিটারের ১০ লক্ষ ভাগের ১ ভাগ দৈর্ঘ্যকে ১ মাইক্রো মিটার বলে।

একই ভাবে, ১ মিটারের ১০০ কোটি ভাগের ১ ভাগ দৈর্ঘ্যকে ১ ন্যানো মিটার বলে। ১ ন্যানোমিটার ! অনেক অনেক ক্ষুদ্র দৈর্ঘ্য। এই দৈর্ঘ্য এতো ক্ষুদ্র যে খালি চোখে দেখা যায় না। সুতরাং কোন বস্তু কণার দৈর্ঘ্য যদি ১ থেকে ১০০ ন্যানো মিটার হয় তাহলে তাকে কলয়েড বলা হয়।

কলয়েড কণার উদাহরণ : লিপোপ্রোটিন, RNA অণু, DNA অনু, প্রোটিন ইত্যাদি কলয়েড কণার উদাহরণ।

কলয়েড বা কলয়েডীয় দ্রবণ দ্রবণ কাকে বলে?

কোন একটি দ্রাবকের মধ্যে কলয়েড কণা যদি দ্রবীভূত না হয়ে ইতস্তত ভাবে ঘুরে বেড়ায় এবং একটি অস্বচ্ছ ও অসমসত্ব মিশ্রণ তৈরি করে তাহলে তাকে কলয়েড দ্রবণ বা কলয়েডীয় দ্রবণ বলে। কণাগুলো খালি চোখে দেখা যায় না। এমনকি কণাগুলোকে  ফিল্টার কাগজ দিয়েও দ্রাবক থেকে আলাদা করা যায় না। কলয়েড দ্রবণের উদাহরণ : দুধ, কুয়াশা, চা, কফি, ধোঁয়া, রক্ত, সাবানের ফেনা, ভাতের পাতলা ফেন ইত্যাদি।

কলয়েড ধর্ম বলতে কী বোঝায়?

আমরা জানি সাধারণত কোনো তরলে অদ্রবণীয় পদার্থ মিশ্রিত করলে কিছুক্ষণের মধ্যেই তরলের নিচে জমা হয় কিংবা তরলের উপরে ভেসে থাকে। কিন্তু কলয়েড কণাগুলো ঠিক এর উল্টো আচরণ করে। যেই ধর্মের জন্য কলয়েড কণাগুলো দ্রাবকে দ্রবীভূত না হওয়া সত্ত্বেও মিশ্রণের তলায় জমা হয় না এবং উপরে ভেসে থাকে না বরং মিশ্রণের  সর্বত্র সমান অনুপাতে বিদ্যমান থাকে সেই ধর্মই হচ্ছে কলয়েড ধর্ম। উদাহরণ হিসেবে আমরা দুধের কথা বলতে পারি। দুধে আছে পানি এবং চর্বি। চর্বি পানিতে অদ্রবণীয়। তাই মিশ্রণের পর পানিতে চর্বি ভেসে থাকার কথা। কিন্তু বাস্তবে চর্বি পানিতে ভেসে না উঠে মিশ্রণের সর্বত্র বিদ্যমান থাকে। চর্বির এই ধর্মই হচ্ছে কলয়েড ধর্ম।

কলয়েড দ্রবণের দশা

একটি কলয়েড দ্রবণের দুইটি দশা থাকে। দশা দুই টি হলো –
১। ডিসপার্সড দশা

২। ডিসপারসড দশা

দশার উপর ভিত্তি করে কলয়েড দ্রবনকে দুইটি শ্রেণীতে ভাগ করা যায়। যথা –

১। সাসপেনশন : কলয়েড দ্ৰবনের ডিসপারসড দশা বা কলয়েড কণা যদি কঠিন হয় এবং ডিসপারশন দশা বা মাধ্যম যদি তরল হয়,তবে সে দ্রবনকে বলা হয় সাসপেনশন। যেমন – এন্টাসিড সিরাপ, লোহিত রক্ত কণিকা ইত্যাদি।

২। ইমালশন : কলয়েড দ্ৰবনের কলয়েড কণা ও মাধ্যম উভয় দশাই যদি তরল হয়, তবে সে দ্রবনকে বলা হয় ইমালশন। ইমালশনের উদাহরণ হচ্ছে দুধ। দুধে আছে পানি এবং চর্বি।  চর্বি হচ্ছে কলয়েড কণা। দুধে যে চর্বি থাকে সেটি তরল। আবার চর্বি কণাগুলো যে পানিতে থাকে সেই পানিও তরল। তাই দুধ হচ্ছে একটি ইমালশন দ্রবণ।

সমসত্ত্ব দ্রবণ ও কলয়েড দ্রবণের মধ্যে পার্থক্য কী?

কলয়েড দ্রবণের কলয়েড কণাগুলো মাইক্রোষ্কোপে দেখা যায়। কিন্তু সমসত্ত্ব মিশ্রণে দ্রবের কোন কণা মাইক্রোস্কোপেও দেখা যায় না।

কেন কলয়েড দ্রবণ তৈরি হয়?

ইতিমধ্যে আমারা জেনেছি যে, কলয়েড কণাগুলো অতিক্ষুদ্র কিন্তু এতো ক্ষুদ্র নয় যে দ্রাবকের আন্ত আণবিক ফাঁকের মধ্যে ঢুকে অদৃশ্য হয়ে যাবে। আবার আকারে এতো বড় নয় যে কণাগুলো আকর্ষণ বলের জন্য একত্রিত হবে এবং ভারী হয়ে অধঃক্ষিপ্ত হবে। সুতরাং কলয়েড কণাগুলো মাঝারি আকারের হওয়ায় দ্রাবকের মধ্যে ঘুরে বেড়ায় এবং কলয়েড দ্রবণ তৈরি করে।

কলয়েডের বৈশিষ্ট্য

১। কলয়েড কণাগুলো এতো ক্ষুদ্র যে এদের খালি চোখে দেখা যায় না।
২। পার্চমেন্ট কাগজ দিয়ে বা মাছের পটকা দিয়ে কলয়েড মিশ্রণ থেকে দ্রাবক ও কলয়েড কণাগুলো পৃথক করা যায়।      ৩। কলয়েড মিশ্রণ সহজে থিতিয়ে পড়ে না।
৪। কলয়েড মিশ্রণে তীব্র আলোক রশ্মি পাঠিয়ে আল্ট্রা মাইক্রোস্কোপ দিয়ে কলয়েড কণার উপস্থিতি বোঝা যায়।
৫। কলয়েড কণার আকারের উপর কলয়েড দ্রবণের বর্ণ নির্ভর করে।
৬। সাধারণ ফিল্টার কাগজের মধ্য দিয়ে কলয়েড কণা সহজেই বের হয়ে যেতে পারে।
৭। কলয়েড দ্রবণ অস্বচ্ছ এবং অসমসত্ব।
৮। কলয়েড দ্রবণের মধ্যে যদি আলোক রশ্মি পাঠানো হয় তাহলে আলোক রশ্মির বিচ্ছুরণ ঘটে। এই বিচ্ছুরণের ঘটনাকে টিন্ডাল এফেক্ট বলে।
৯। কলয়েড দ্রবণে কলয়েড কণাগুলো ব্রাউনীয় গতি প্রদর্শন করে।
১০। কলয়েড দ্রবণের কলয়েড কণাগুলোর ব্যাপন ধীর গতিতে হয়।

আশাকরি আজকের পোস্টটি পড়ে আপনি কলয়েড কি? কলয়েডের বৈশিষ্ট্য, জানতে পেয়েছেন।

admin

I am Md. Rezaul Karim. I am a blogger and an online entrepreneur. Today I will tell you all the important details about me.I established the quicksearch24.com web site on my personal initiative. In this web site I want to share my knowledge with you about latest technology, health, education, news, travel and online earning.We always try to serve correct and accurate information. Besides, we always try to serve relevant, informative and up-to-date content. We do not publish any obscene or obscene content. We only publish things that are very essential for daily life. So our published content is applicable to people of all ages.The present age is the age of information and technology. So we try to publish new information about technology first. We want people to know that they can make money online by doing simple things like sharing photos on social media or watching videos on YouTube.If you have any questions about any information published on our website or want to know about any other matter, please let us know by commenting. We will try to answer your question correctly as soon as possible.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *