জাতীয় পরিচয় পত্র ডাউনলোড করার নিয়ম
জাতীয় পরিচয় পত্র ডাউনলোড করার নিয়ম – জাতীয় পরিচয় পত্র প্রত্যেকের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টস। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজে জাতীয় পরিচয় পত্রের প্রয়োজন হয়। বর্তমানে স্মার্ট আইডি কার্ড প্রদানে বিলম্ব হওয়ায় অনেকে অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ডের কপি ডাউনলোড করে তাদের গুরুত্বপূর্ণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু যারা এখন পর্যন্ত ভোটার আইডি কার্ডের অনলাইন কপি ডাউনলোড করতে পারেননি তারা আমাদের আজকের এই পুষ্টি পড়ে সহজে জানতে পারবেন কিভাবে ডাউনলোড করবেন। আপনি যদি অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড পেতে চান তবে আপনাকে অবশ্যই নিচে নিয়মগুলি অনুসরণ করতে হবে। তাহলে আপনি ভোটার আইডি কার্ড সফলভাবে ডাউনলোড করতে পারবেন।
জাতীয় পরিচয় পত্র ডাউনলোড করার নিয়ম
আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র ডাউনলোড করার জন্য https://services.nidw.gov.bd/nid-pub/ ওয়েবসাইটে যেতে হবে। প্রথম ইনপুট ক্ষেত্রে ফরম নম্বর বা আইডি কার্ড নম্বর লিখুন, জন্ম তারিখ বাক্সে জন্ম তারিখ( দিন, মাস, বছর) লিখুন এবং পরবর্তী ধাপে আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র ডাউনলোড করতে সাবমিট বাটনে ক্লিক করুন।
এনআইডি কার্ড ডাউনলোড করার ধাপে যাওয়ার আগে স্থায়ী এবং বর্তমান ঠিকানা তথ্য প্রদান করতে হবে। জাতীয় পরিচয় পত্রের জন্য আবেদন করার সময় যে মোবাইল নাম্বারটি দিয়েছেন সেই নাম্বারে একটি ওটিপি কোড যাচাই করণের জন্য যাবে। ওটিপি কোড যাচাই করনের মাধ্যমে একাউন্ট নিবন্ধন সম্পন্ন করতে হবে। উপরে তথ্য সঠিক হলে আপনাকে ফেজ ভেরিফিকেশন করতে বলা হবে।
অবশেষে NID Wallet অ্যাপ এর মাধ্যমে ফেস ভেরিফিকেশন সম্পন্ন করার পর, ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার জন্য ড্যাশবোর্ড খুলবে। আপনি একাউন্টে ড্যাশবোর্ডের নিচের ডাউনলোড অপশন থেকে জাতীয় পরিচয় পত্রে অনলাইন কপি ডাউনলোড করতে পারেন।
আরও পড়ুনঃ
ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার নিয়ম
অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড নিজে ডাউনলোড করতে, অফিশিয়াল ওয়েবসাইট https://services.nidw.gov.bd/nid-pub/claim-account এর নিবন্ধন পৃষ্টায় যেতে হবে। এরপর জাতীয় পরিচয় পত্রের নম্বর/ ফরম নম্বর, জন্ম তারিখ, সিকিউরিটি ক্যাপচা এবং ফেস ভেরিফিকেশন। তারপর আপনি প্রোফাইল লগইন করে ডেস বোর্ডের ডাউনলোড অপশন থেকে ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে পারবেন।
ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে যা প্রয়োজন
আপনি যে জাতীয় পরিচয় পত্র ডাউনলোড করতে চান তার কিছু তথ্য ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে প্রয়োজন হবে। আইডি কার্ড ডাউনলোড করার জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত কাগজপত্র নিচে উল্লেখ করা হলোঃ
- এন আই ডি নম্বর/ ফরম নম্বর
- জন্ম তারিখ( দিন , মাস,বছর)
- মোবাইল নম্বর( যা আবেদনের সময় ব্যবহৃত হয়েছে)
- ঠিকানা
- আইডি কার্ডের মালিক
আপনার যদি উপরে উল্লেখিত কাগজপত্র গুলো থাকে তাহলে আপনি জাতীয় পরিচয় পত্র ডাউনলোড করার জন্য প্রস্তুত। যেহেতু ফেস ভেরিফিকেশন করতে হবে তাই যাদের ভোটার আইডি কার্ড নেই তারা অ্যাকাউন্টে নিবন্ধন করতে পারবে না।
একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন
একটি অ্যাকাউন্ট নিবন্ধন করতে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন এর পরিষেবা পোর্টালে যেতে হবে। ওয়েবসাইটের ঠিকানাটি হলঃ https://services.nidw.gov.bd/nid-pub/ ।তাহলে আপনার অ্যাকাউন্ট নেই? এই বিভাগ থেকে পরবর্তী ধাপে যেতে রেজিস্টার বোটামে ক্লিক করুন।
ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার রেজিস্ট্রেশন ফরম পূরণ
ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে নিবন্ধন ফরমটি পূরণ করুন। নিচের চিত্র অনুযায়ী ভোটার আইডি কার্ডের বিবরণ দিয়ে ফর্মটি পূরণ করতে হবে। নতুন এনআইডির ক্ষেত্রে নতুন এনআইডি কার্ড তৈরির আবেদনে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ফর্মটি পূরণ করতে হবে।
জাতীয় পরিচয় পত্র নম্বর/ ফরম নম্বর- প্রথম ফাঁকা জায়গা ভোটার স্লিপ নম্বর বা আইডি কার্ড নম্বর পূরণ করুন। ভোটার স্লিপে মাত্র আট সংখ্যার নম্বর থাকলে, ফরম নম্বর এর আগে NIDFN যোগ করতে হবে। মনে করুন, আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র ফরম নম্বর হলো 78965531 এখন আপনি এটিকে NIDFN78965531 হিসেবে জাতীয় পরিচয় পত্র নম্বর/ ফরম নম্বর ফিল্ডে লিখবেন।
জন্ম তারিখের ক্ষেত্রে জন্ম তারিখ নির্বাচন করুন। ভোটার আবেদনের জন্ম তারিখ দিতে হবে। আপনার জন্ম তারিখ নির্বাচন করতে জন্ম তারিখ , জন্ম মাস এবং জন্ম বছর নির্বাচন করুন। আপনার আইডি কার্ডের তথ্য সঠিকভাবে ইনপুট পড়ার পরে একটি নিরাপত্তা ক্যাপচা পূরণ করুন এবং জমা দিন। সাবমিট করার পর একটি নতুন পেজ ওপেন হবে।
জাতীয় পরিচয় পত্রের ঠিকানা যাচাই
ভোটার আইডি কার্ড ঠিকানা যাচাই করনের জন্য ব্যক্তিকে বর্তমান এবং স্থায়ী ঠিকানা নির্বাচন করতে হবে। ঠিকানা ভুল হলে আপনাকে জাতীয় পরিচয় পত্র ডাউনলোড করতে দেওয়া হবে না। বর্তমান এবং স্থায়ী ঠিকানা একই হলে উভয় ঠিকানা দিতে হবে।
বর্তমান ঠিকানাঃ এখানে জাতীয় পরিচয় পত্রের আবেদনের প্রদত্ত বর্তমান ঠিকানা লিখতে হবে। বর্তমান ঠিকানা নির্বাচন করতে -১। বিভাগ ২। জেলা ৩। উপজেলা নির্বাচন করতে হবে।
স্থায়ী ঠিকানাঃ ভোটার আইডি কার্ডের জন্য আবেদন করার সময় দেওয়া স্থায়ী ঠিকানা নির্বাচন করুন। যদি স্থায়ী ঠিকানা এবং বর্তমান ঠিকানা একই হয় তাহলে বর্তমান ঠিকানাটি যেভাবে দেওয়া আছে ঠিক সেভাবে স্থায়ী ঠিকানা নির্বাচন করুন।
আপনার ঠিকানা সঠিকভাবে লেখা হলে ফর্মের শেষে জমা দিন বোতামে ক্লিক করুন। আপনার দোয়া ঠিকানাটি সঠিক হলে মোবাইল নম্বর যাচাই করনের জন্য একটি নতুন পৃষ্ঠা নিয়ে যাবে।
মোবাইল নাম্বার ভেরিফিকেশন
এ পর্যায়ে আপনার ভোটার আইডি কার্ডে আপনার দেওয়া নাম্বারটি যাচাই করতে হবে। মোবাইল নম্বর যাচাই করনের জন্য আপনি আপনার ফোন নম্বরের প্রথম এবং শেষ অংশ দেখতে পাবেন। এবার আপনার নম্বর পেয়ে গেলে বার্তা পাঠান বোতাম টিপুন। প্রদর্শিত মোবাইল নম্বরটি আপনার না হলে বা কোন নম্বর প্রদর্শিত না হলে ‘মোবাইল পরিবর্তন করুন’ বিকল্প নির্বাচন করুন। তারপর আপনার সক্রিয় মোবাইল নাম্বার দিয়ে বার্তা পাঠান অপশনে ক্লিক করুন। তারপর এনআইডি সার্ভার আপনার ফোনের একটি বার্তা পাঠাবে সেখানে একটি ছয় সংখ্যার ওটিপি কোড থাকবে।
OTP Submit
একাউন্ট রেজিস্ট্রেশনের এই ধাপে ফোন নম্বরটি কে OTP এর মাধ্যমে যাচাই করতে হবে। এটি জাতীয় পরিচয় পত্র যাচাইয়ের একটি মাধ্যম কারণ ভোটার আইডি কার্ডের প্রকৃত মালিকের এই নম্বরটি আছে। যখন আপনার মোবাইল ফোনে ওটিপি কোড পাঠানো হবে তখন যাচাই করণ বাক্সে কোটি ইনপুট করুন।
৬০ সেকেন্ড অপেক্ষা করার পরও যদি আপনার ফোনে কোন যাচাই করেন কোড না পাওয়া যায়। তাহলে একটি নতুন ওটিপি কোর্টের জন্য ‘পুনরায় পাঠান’ বোতামে ক্লিক করুন। এরপর যদি কোন কোড না আসে তাহলে আপনি অন্য নম্বর ব্যবহার করে দেখতে পারেন। কোন সময় সার্ভারের সমস্যা বা মোবাইল নেটওয়ার্ক সমস্যার কারণে এমনটা হতে পারে।
যদি আপনার মোবাইলে ৬ ডিজিটের ওটিপি কোড এসে থাকে তাহলে ওটিপি সাবমিট বক্সে আপনার যাচাই করুন কোড লিখুন এবং “নিশ্চিত করুন” অপশনে ক্লিক করুন। এরপর আপনাকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পৃষ্ঠা নিয়ে যাওয়া হবে। যেখানে যার ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে হবে তার ফেস ভেরিফিকেশন করতে বলা হবে।
Face Verification
জাতীয় পরিচয় পত্র ডাউনলোড করার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হল ফেজ ভেরিফিকেশন।এই ধাপে জাতীয় পরিচয় পত্রের মালিক কে অবশ্যই উপস্থিত থাকতে হবে। NID Wallet apps ব্যবহার করে ব্যক্তির ফেস ভেরিফিকেশন করা হয়।
আপনার মোবাইলে যদি NID Wallet apps না থাকে তাহলে Google Play Store থেকে আপনার মোবাইলে অ্যাপসটি ইন্সটল করতে হবে। Apps ইনস্টল হয়ে গেলে ওপেন করুন। তারপর এটি ক্যামেরা চালু করার অনুমতি চাইবে সবকিছু সেটআপ করার পরে সফটওয়্যারটি কিউআর কোড স্ক্যান করতে ক্যামেরা চালু করবে। NID Wallet apps এর মাধ্যমে ওয়েবসাইটে প্রদর্শিত QR কোড স্ক্যান করে ফেস ভেরিফিকেশন করতে হবে।
ফেস ভেরিফিকেশনের সময় ব্যক্তিকে তার চোখ নড়াচড়া করতে হবে এবং তার মাথা বাম এবং ডান দিকে সরাতে হবে। ব্যক্তির শনাক্ত হলে অনলাইনে জাতীয় পরিচয় পত্র ডাউনলোড করার অনুমতি দেওয়া হবে।
NID Card Download
জাতীয় পরিচয় পত্র ডাউনলোড প্রবেশ করুন।এরপর হোম মেনুতে প্রবেশ করুন। আপনি এখন এই পি স্টার নিচে একটি ডাউনলোড বোতাম সহ আপনার ছবি এবং আপনার পরিচয়পত্র সম্পর্কে কিছু তথ্য দেখতে পাবেন। এনআইডি কার্ড ডাউনলোড করতে ডাউনলোড বোতামে ক্লিক করুন। তারপর আপনার মোবাইল বা কম্পিউটারে জাতীয় পরিচয়পত্রের পিডিএফ ডাউনলোড হয়ে যাবে।
ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড হয়ে গেলে এটি প্রিন্ট করে লেমিনেটিং করতে হবে। তাহলেই এটি আসল জাতীয় পরিচয় পত্র হয়ে যাবে। অনলাইন থেকে ডাউনলোড করা জাতীয় পরিচয় পত্র এবং নির্বাচন কমিশনের দেওয়া এনআইডি কার্ডের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই।
এই আইডি কার্ড আপনার প্রয়োজনে যে কোন জায়গায় ব্যবহার করতে পারবেন কোন সমস্যা হবে না। কারণ এই এনআইডি কার্ড বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের অফিসিয়াল সাইট থেকে তৈরি করা হয়েছে।
শেষ কথা
আজকের পোস্টে অনলাইন থেকে কিভাবে ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে হয় সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি।আশা করি আপনি এখন আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র অনলাইন থেকে ডাউনলোড করতে পারবেন।আজকের পোস্টটি আপনাদের ভালো লেগে থাকলে শেয়ার করতে ভুলবেন না।