অনলাইনে মোবাইল ট্রেন টিকেট বুকিং এবং টিকেট ফেরত দেওয়ার নিয়ম
অনলাইনে মোবাইল ট্রেন টিকেট বুকিং এবং টিকেট ফেরত দেওয়ার নিয়ম – সড়ক পথে তুলনায় টেনে ভ্রমণ অধিকাংশ মানুষের কাছে বিশেষভাবে আকর্ষণীয়। তবে ট্রেন স্টেশনগুলোতে অনলাইনের মাধ্যমে টিকিট কাটার ব্যবস্থা থাকলেও যাত্রীরা প্রয়োজনীয় তথ্যের অভাবে এই সুবিধা ভোগ করতে পারেন না। ঈদ এবং অন্যান্য উৎসবের সময় কাউন্টারের সামনে যাত্রীদের অনিশ্চিত অপেক্ষা এবং টিকিট না পাওয়ার দুর্ভোগ ও কান্নার দৃশ্য প্রতিবছর দেখা যায়। কম ঝাঁকুনি, মুভমেন্টের স্বাধীনতা, চলন্ত ট্রেনের টয়লেটের সুবিধা, আলাদা খাবার ক্যান্টিন এবং মুসল্লিদের জন্য নামাজ পড়ার ব্যবস্থা সহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার কারণে ট্রেনে যাতায়াত সবার প্রথম পছন্দ। কিন্তু এক জটিল প্রশ্ন থেকে যায় টিকিট পাওয়া যাবে তো? বিগত বছরের ঈদ বা দীর্ঘ ছুটির সময় টিকিটের জন্য ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকা দৃশ্য খুবই বেদনাদায়। কালোবাজারিদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে হলেও ট্রেনের টিকিট কেনার প্রবণতা প্রমাণ করে যে রেলপথে ভ্রমণের প্রতি মানুষের আগ্রহ অপরিসীম।
অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কোথায় পাওয়া যাবে?
২০০৫ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে বাংলাদেশের রেলওয়ের অনলাইন সেবা ও ইন্টিগ্রেটেড টিকেটিং সিস্টেম এর প্রকল্প সহজে মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হয়। চুক্তি অনুযায়ী কোম্পানিটি প্রতি টিকিটের জন্য ২৫ পয়সা পাবে। অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটতে হলে আপনাকে সহজ পরিচালিত বাংলাদেশের রেলওয়ের ই-টিকিটের ওয়েবসাইট https://eticket.railway.gov.bd/ প্রবেশ করতে হবে। এছাড়া অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীরা গুগল প্লে স্টোর থেকে রেল সেবা অ্যাপটি ডাউনলোড করতে পারবেন। ওয়েবসাইট এবং অ্যাপের মাধ্যমে প্রতিদিন সকাল আটটা থেকে রাত এগারোটা পর্যন্ত দশ দিন পূর্বে থেকে টিকিট কাটা যায়। একজন যাত্রীকে টিকিট কাটতে হলে অবশ্যই তাকে বাংলাদেশের রেলওয়ের ই-টিকেটিং ওয়েবসাইটে নিবন্ধন করতে হবে।
কিভাবে নিবন্ধন করবেন?
টিকিট কালোবাজারি ও বেআইনি কার্যক্রম প্রতিরোধ করতে একজন যাত্রীকে অনলাইনে টিকিট কেনার আগে রেলওয়ের ওয়েবসাইটে বাই অ্যাপে নিবন্ধন করতে হবে। জাতীয় পরিচয় পত্র, মোবাইল নম্বর এবং একটি ইমেইল ঠিকানা ব্যবহার করতে হবে। ১৮ বছরের নিচে যাত্রীদের জন্য জন্ম নিবন্ধন সার্টিফিকেট এবং বিদেশী যাত্রীদের জন্য পাসপোর্টের তথ্য ব্যবহার করতে হবে। অন্য কেউ আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র দিয়ে নিবন্ধন করে রাখলে আপনাকে support@eticket.railway.gov.bd এর মাধ্যমে যোগাযোগ করতে হবে। অনলাইনে ট্রেনের সময়সূচী জানতে বাংলাদেশ রেলওয়ের ই টিকিটের ওয়েবসাইট বা রেল সেবা ওয়েবসাইটে যেতে হবে। ট্রেন ছাড়ার সময় মন্তব্যে পৌঁছানোর সময় সপ্তাহের ছুটির দিন এবং সম্ভাব্য যাত্রাপথের তত্ত্ব সবই জানা যাবে।
অনলাইনে মোবাইল ট্রেন টিকেট বুকিং
তথ্য জানার পর আপনাকে ওয়েবসাইট বা অ্যাপের মাধ্যমে যাত্রার স্থান, গন্তব্য, যাত্রার তারিখ এবং ভ্রমণের শ্রেণী নির্বাচন করে সার্চ করতে হবে। উদ্ভূত তালিকা থেকে কাঙ্খিত ট্রেনের তথ্য এবং সুবিধা দেখা যাবে। টিকিট কাটার জন্য নিচে ধাপ গুলো অনুসরণ করুন।
১। আপনার পছন্দের শ্রেণীতে “Book Now” এ ক্লিক করতে হবে।
২। ফাকা সিট দেখতে ড্রপ ডাউন থেকে বগি নির্বাচন করতে হবে।
৩। সীটের বিন্যাস দেখে সাদা সিট নির্বাচন করে “ Continue Purchase” এ ক্লিক করুন।
৪। একাধিক পাত্রীর জন্য তাদের পরিচয় পত্রের তথ্য দিতে হবে। এর জন্য ৫ মিনিট সময় থাকবে।
টিকিট কাটা হলে পরবর্তী পদক্ষেপ
অনলাইন টিকিটের প্রিন্ট কপি ক্যাশ কাউন্টার থেকে প্রিন্ট করিয়ে নিতে হবে।
যাত্রাকালে জাতীয় পরিচয় পত্র সঙ্গে রাখতে হবে। না হলে জরিমানা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
যদি যাত্রা সিদ্ধান্ত বাতিল করতে চান, তবে নির্দিষ্ট সময়ের ভিত্তিতে চার্জ কেটে টিকিট ফেরত দেওয়া যাবে।
প্ল্যাটফর্ম থেকে প্রাপ্ত কপি দিয়ে আপনি যদি মূল টিকিট প্রিন্ট করে ফেলেন তাহলে সেটা আর অনলাইনে ফেরত দেওয়া যাবে না।
টিকিট ফেরত দেওয়ার নিয়ম
বাংলাদেশের রেলওয়ে ওয়েব সাইটে লগইন করে পারচেজ হিস্টোরিতে যেতে হবে এবং টিকিট ক্যানসেল করতে হবে। ওটিপি কোড দিয়ে বুকিং বাতিল হবে। তবে ঈদের বিশেষ টিকিট ফেরত দেওয়া যায় না।
অনলাইনে টিকিট রিফান্ডের নিয়ম
ভিন্ন পরিস্থিতিতে, মোবাইল ব্যাংকিং এবং অনলাইন ব্যাংকিং কর্তৃপক্ষ আট কার্য দিবসে টাকা ফেরত দেবে। তবে সমস্ত ট্রানজেকশন ফি অফেরত যোগ্য। আগে যেভাবে টিকিটের জন্য স্টেশনের লম্বা লাইন অপেক্ষা করতে হতো এখন তা পরিবর্তিত হয়ে হাতের মুঠোয় এসেছে অনলাইন টিকিটের মাধ্যমে। এটি স্মার্ট বাংলাদেশ তৈরিতে আমাদের সহায়তা করছে।
আরও পড়ুনঃ
- মধুমতি এক্সপ্রেস ট্রেনের সময়সূচী, টিকিট ও ভাড়ার তালিকা
- সৈয়দপুর টু খুলনা ট্রেনের সময়সূচী ও ভাড়ার তালিকা ২০২৪