ই পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে ২০২৪
ই পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে ২০২৪ – পাসপোর্ট পেতে কি কি কাগজপত্র প্রয়োজন তা সঠিকভাবে না বোঝার কারণে অনলাইনে সঠিকভাবে ই পাসপোর্ট এর আবেদন করার পরও আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।ই পাসপোর্ট এর জন্য পাসপোর্ট অধিদপ্তর এবং বাংলাদেশ ইমিগ্রেশন এর সর্বশেষ নির্দেশনা উল্লেখিত নথিগুলো আমরা জেনেছি। যেহেতু আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস গুলো সাধারণত জেলা শহর বা বিভাগীয় শহরে অবস্থিত তাই পাসপোর্ট অফিসে যাওয়া সবার জন্য খুব সহজ নয়। এতে অর্থ এবং সময় উভয় খরচ হয়। এতকিছুর পরও পাসপোর্ট এর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না নিয়ে আবেদন শেষ না হলে এর চেয়ে কষ্টের আর কিছু নেই। তাই পাসপোর্ট পেতে কি কি কাগজপত্র প্রয়োজন এবং পাসপোর্ট অফিসে জমা দেওয়া বা প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্রের বিস্তারিত তথ্য দিয়ে লেখাটি সাজানো হয়েছে।
ই পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে ২০২৪
২৩ অক্টোবর ২০২২ তারিখে বাংলাদেশ পাসপোর্ট অধিদপ্তরের সর্বশেষ নির্দেশনা অনুসারে ই পাসপোর্ট এর জন্য জাতীয় পরিচয় পত্র এন আইডি কার্ড বা অনলাইন জন্ম নিবন্ধন পত্র প্রয়োজন। নাগরিকত্ব সনদ ও পেশার প্রমাণপত্র সঙ্গে জমা দিতে হবে। ই পাসপোর্ট পেতে সরকারি কর্মচারীদের জিও বা এনওসি প্রয়োজন। উল্লেখিত মৌলিক নীথিগুলো ছাড়াও ই পাসপোর্ট আবেদনের সাথে পাসপোর্ট অফিসে আরো কিছু নতুন জমা দিতে হবে। প্রয়োজনীয় নথি আবেদনকারীর বয়স পেশা পূর্ববর্তী পাসপোর্টে বা না থাকার উপর ভিত্তি করে পরিবর্তিত হতে পারে।
এই পাসপোর্ট এর আবেদন সম্পন্ন হওয়ার পর পরবর্তী ধাপ হল অনলাইনে বা ব্যাংক ড্রাফট এর মাধ্যমে ই পাসপোর্ট ফ্রি পরিশোধ করা। এরপরে পাসপোর্ট অফিসে জমা দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় নথি সংগ্রহ করা হয়। এর জন্য ই পাসপোর্ট পেতে কি কি প্রয়োজন তা জানা দরকার।
ই পাসপোর্ট করতে কি কি কাগজপত্র লাগে
আপনার বয়স ১৮ বা তার বেশি হলে জাতীয় পরিচয় পত্র নাগরিক প্রশংসা পত্র পেশাগত প্রশংসা পত্র এবং ২০ বছরের নিচে যাদের জাতীয় পরিচয় পত্র নেই তাদের এনআইডি কার্ডের পরিবর্তে অনলাইনে জন্ম সনদপত্রের প্রয়োজন হবে।
পাসপোর্ট পেতে কি কি লাগে?
নিচে পাসপোর্ট অফিসে পাসপোর্ট এর জন্য জমা দেওয়ার নথিপত্রের তালিকা উল্লেখ করা হলো –
বয়স 18 বছর বা তার বেশি হলে পাসপোর্ট করতে যা যা লাগবে
যাদের জাতীয় পরিচয় পত্র আছে তাদের পাসপোর্ট এর জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত কাগজপত্র হলোঃ
১। আসল জাতীয় পরিচয় পত্র এবং এর ফটোকপি।
২। ই পাসপোর্ট আবেদনের সারাংশ।
৩। পাসপোর্ট আবেদন পত্র।
৪। পাসপোর্ট ফি প্রদানের চালান/ ব্যাংক ড্রাফট কপি।
৫। নাগরিকত্ব সনদ।
৬। পেশাদার সার্টিফিকেটের ফটোকপি।
২০ বছরের কম যাদের NID Card হয়নি
অনলাইনঅনলাইন জন্ম নিবন্ধন এর মাধ্যমে পাসপোর্টের জন্য ২০ বছর বয়স পর্যন্ত আবেদন করা যায়। যারা ২০ বছরের কম বয়সি এবং যাদের এখনো জাতীয় পরিচয় পত্র হয়নি তারা অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন প্রশংসা পত্র ব্যবহার করে এই পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে পারবেন। যাদের জাতীয় পরিচয় পত্র নেই এবং যাদের বয়স ২০ বছরের কম তাদের পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে যা যা লাগবে তার নিচে উল্লেখ করা হলো –
১। অনলাইন জন্মনিবন্ধন সনদপত্র (BRC) এবং জন্ম নিবন্ধন সনদপত্রের অনলিপি।
২। ই পাসপোর্ট আবেদনের- Application summery
৩। পাসপোর্ট আবেদনের ফরম – Application Form
৪। পাসপোর্ট ফি প্রদানের চালান/ ব্যাংক ড্রাফট কপি।
৫। নাগরিকত্ব সনদ।
৬। পেশা ছাত্র-ছাত্রী হলে স্টুডেন্ট আইডি/ সার্টিফিকেট ।
সরকারি চাকরিজীবীদের পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে
সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারীদের পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করার জন্য সাধারণ মানুষের যে সমস্ত কাগজপত্র লাগে তার পাশাপাশি আরও একটি নথির প্রয়োজন হয় আর সেটি হলো NOC (নো অবজেকশন সার্টিফিকেট) বা GO (সরকারি আদেশ) কাগজ।
NOC: যদি কোন সরকারি কর্মচারী নিজের থেকে পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করেন তাহলে তাকে তার বিভাগ, অধিদপ্তর বা মন্ত্রণালয় থেকে একটি অনাপত্তি সনৎ সংগ্রহ করতে হবে।
GO: সরকারি কাজে দেশের বাইরে যেতে হলে পাসপোর্ট আবেদনের সময় সরকারি আদেশ জমা দিতে হবে।
শিশুদের ই পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে
শিশুদের ই পাসপোর্ট এর জন্য অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদের সাথে পিতা-মাতা জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি সংযুক্ত করা বাধ্যতামূলক। শিশুদের ই পাসপোর্ট এর জন্য যে সমস্ত কাগজপত্র প্রয়োজন তার নিচে উল্লেখ করা হলো-
১। অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ
২। পিতা মাতার এনআইডি কার্ডের ফটোকপি
৩। অনলাইন অ্যাপ্লিকেশন সামারি
৪। অ্যাপ্লিকেশন ফর্ম
৫। পাসপোর্ট ফি পরিশোধের A challan
৬। 3R Size ছবি Lab Print,Gray Background
প্রয়োজন অনুসারে কিছু কিছু ক্ষেত্রে নিজের কাগজপত্র গুলো প্রয়োজন হতে পারে-
১। পাসপোর্ট রি ইস্যুর ক্ষেত্রে -পুরাতন পাসপোর্ট
২। চেয়ারম্যানের সার্টিফিকেট
৩। ইউটিলিটি বিলের কপি অর্থাৎ বিদ্যুৎ বা গ্যাস বিল।
৪ । পাসপোর্ট হারিয়ে গেলে- পাসপোর্ট হারানোর জিডি।
পাসপোর্ট করতে কি কি জমা দিতে হবে
বয়স বা পেশাগত পার্থক্যের কারণে প্রতিটি ব্যক্তির পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করার জন্য বিভিন্ন অতিরিক্ত নথি বা কাগজপত্র প্রয়োজন। পাসপোর্ট এর জন্য কি কি কাগজ লাগবে তা বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
জাতীয় পরিচয় পত্র বা জন্ম নিবন্ধন সনদ
পাসপোর্ট অধিদপ্তর হালনাগার তথ্য অনুযায়ী যাদের বয়স ১৮ বছরের বেশি, যাদের জাতীয় পরিচয় পত্র আছে তারা পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে জাতীয় পরিচয় পত্র ব্যবহার করবেন। আর যাদের জাতীয় পরিচয় পত্র নেই তারা 20 বছর বয়স পর্যন্ত জন্ম নিবন্ধন সনদ ব্যবহার করে পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে পারবেন। জন্ম নিবন্ধন অনলাইন হতে হবে।
পাসপোর্ট আবেদনের সামারি
অনলাইন পাসপোর্ট আবেদনের শেষে আপনি আবেদনের সারাংশ বা নিবন্ধন ফরম ডাউনলোড করার বা পিডিএফ ফরম্যাটে সংরক্ষণ করার অপশন পাবেন। পাসপোর্ট অফিস প্রথমে পাসপোর্ট এর আবেদনের সারাংশ এবং আবেদন পত্র পরীক্ষা করে।
পাসপোর্ট ফি প্রদানের চালান
যদি ই পাসপোর্ট ফি ব্যাংকের মাধ্যমে অর্থাৎ চালানের মাধ্যমে পরিশোধ করা হয় তাহলে টাকা পরিষদের পর চালানোর রশিদ পাসপোর্ট অফিসে জমা দিতে হবে। তবে পাসপোর্ট ফি অনলাইন পেমেন্ট গেটও এর মাধ্যমে পরিশোধ করা হলে তা আবেদনের সারাংশ উল্লেখ করতে হবে। এক্ষেত্রে অনলাইন পেমেন্ট এবং ডিজিটাল চালানো সংগ্রহ করা যেতে পারে। এটি সংগ্রহ এবং সংযুক্ত করা উচিত।
প্রি পুলিশ ভেরিফিকেশন
জরুরী পাসপোর্ট এর ক্ষেত্রে যেমন সুপার এক্সপ্রেস ডেলিভারির জন্য ই পাসপোর্ট, আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে পাসপোর্ট এর আবেদন জমা দেওয়ার সাথে ট্রাক পুলিশ যাচাই করন সংযুক্ত করতে হবে। আগাম পুলিশ ভেরিফিকেশন আবেদন প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে।
সচরাচর জিজ্ঞাসিত কিছু প্রশ্ন ও উত্তর
পাসপোর্ট রি ইস্যু করতে কি কি লাগে?
একটি পাসপোর্ট পুনরায় ইস্যু করার জন্য একটি নতুন পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করার মত সমস্ত কাগজপত্র প্রয়োজন। তবে এক্ষেত্রে অতিরিক্ত কাগজপত্র হিসেবে পুরনো পাসপোর্ট ও তার ফটোকপি দিতে হবে।
পাসপোর্ট রি ইস্যু করতে কি কি লাগে?
জাতীয় পরিচয়পত্র
জন্ম নিবন্ধন যাদের বয়স ২০ বছরের কম।
শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র।
লিখিত আবেদন।
অঙ্গীকার নামা।
পুরাতন পাসপোর্ট ও এর ফটোকপি।
জাতীয় পরিচয়পত্র ছাড়া পাসপোর্ট করা যায়?
আপনার বয়স ২০ বছরের বেশি না হওয়া পর্যন্ত জাতীয় পরিচয়পত্র ছাড়াই অনলাইন জন্ম নিবন্ধন ব্যবহার করে একটি পাসপোর্ট পাওয়া যেতে পারে।
শেষ কথা
আশা করি আজকের পোস্টটি থেকে আপনি ই-পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে তা জানতে পেরেছেন। আজকের পোস্টের শেয়ার করা তথ্যগুলো আপনারই পাসপোর্ট করতে সহায়তা করবে। পোস্টে যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না। ওয়েবসাইটটি ভিজিট করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।